অবশেষে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দিনমজুর পিতার মেধাবী পুত্র লক্ষন চন্দ্র দাসের উচ্চ শিক্ষার দায়িত্ব নিলেন সংসদ সদস্যএকরামুল করিম চৌধুরী। নোয়াখালীর অবেহেলিত জনপদ সূবর্ণচর উপজেলার খাসেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র লক্ষন এএসসি পরীক্ষায় একমাত্র ছাত্র যিনি পুরো উপজেলার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ -৫ পেয়েছে। পিতা দিনমজুর প্রিতম দাস ও মা অঞ্জলী দাসের ৪ সন্তানের মধ্যে সে বড় লক্ষন।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিল লক্ষন। ৫ম ও ৮ম শ্রেনীতে টেলেন্টপুল বৃত্তি ও পেয়েছে।অভাবের সংসারে বাড়িতে কেরোসিনের আলো জালিয়ে রাতের বেলা পড়ালেখা করতে পারতোনা । তাই স্কুলের শ্রেনী কক্ষের বিদ্যুৎ অথবা অন্য কোন উপায়ে ছুটির পর রাত ৮টা পর্যন্ত পড়ালেখা করতো শিক্ষকদের সাহায্য নিয়ে। তার অদম্য বাসনাকে সহায়তা দিয়েছে স্কুল পরিচালনা পরিষদ।এএসসি পরীক্ষায়শুধু মাত্র বোর্ড ফির টাকা ও যোগাড় করতে পারেনি লক্ষনের পিতা। তাই হতাশা গ্রাস করেছিল লক্ষনের পরিবারকে ।স্কুলের প্রধান শিক্ষক লোকমান হোসেন ভূঞা সে সংকট নিরসনে এগিয়েএসে তার পরীক্ষা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বাবা মায়ের ৭ জনের অভাবের সংসারে কিছুটা সময় পেলে নিজেও অন্যের জমিতে মজুর খাটতো লক্ষন।এ ছাড়া বাড়ির অঙ্গিনায় মৌসুমি সবজি চাষ করে তা’ বিক্রি করে পরিবার কে আর্থিক জোগান দিতো।এবারের এএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর শিক্ষানুরাগী ও সূবর্ণচর উপজেলার চেয়ারম্যন অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের নজরে পড়ে লক্ষন।
তিনি প্রথম উদ্যোগী হয়ে তারই হাতে গড়া স্থানীয় সৈকত ডিগ্রি কলেজে বিনা খরচে লেখাপড়ার সুযোগ দেয়ার অঙ্গীকার করেন।
বিষয়টি শোনার পর স¤প্রতি সূবর্ণচর উপজেলা পরিষদের একটি অনুষ্ঠানে যোগদিতে আসা সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী তাৎক্ষনিক ডেকে পাঠান লক্ষন কে। লক্ষন অনুষ্ঠান স্থলে আসলে তিনি সভা মঞ্চে তাকে ডেকে এনে বুকে জড়িয়ে ধরেন । অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিও দর্শক তাকে করতালি দিয়ে সম্ভাষন জানায়।
সংসদ সদস্য একরাম চৌধুরী তাকে শিক্ষা সামগ্রী ও পোষাক কেনার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন।পরবর্তীতে লক্ষনের শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সকল ধরনের সহযোগীতার ঘোষনা দেন।
ভবিষ্যতে বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে গবেষনাধর্মী কাজে আত্ম নিয়োগ করার আগ্রহ আছে লক্ষনের।
তা’ ছাড়া সুবিধা বঞ্ছিত মেধাবীদের জন্য জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের বাজেটে বিশেষ সুযোগ রাখার অনুরোধ করেছে সে।